কৃষান কন্যা রাহিলা |
মতিয়া চৌধুরীর কক্ষটির দিকে আমি তিন বছর তাকাইও না। কারন আমি জানি সে নিষ্টুর, রাগী আর বদমেজাজী। একদিন আমি ভিষণ রেগে গেলাম কৃষি মন্ত্রনালয়ের অমানবতাপূর্ণ কাজ দেখে। আমি গাড়ীতে বসেই ভেবেছি গিয়েই মন্ত্রীর সাথে দেখা করব যেভাবেই হোক। কিন্ত আমি জানি আমাদের বাস্তবতা। এখানে রয়ে গেছে উচু-নিচুর পার্থক্য। যাকে বলে বৈষ্যম্য নীতি। কারন আমি ১৯৯৬ সনে দেখেছি ঠিক এইভাবে বাইরের ভিজিটর তার সাথে প্রতিনিয়ত দেখা করার সুযোগ আছে অথচ আমি কৃষি মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হয়ে পারিনা কারন আমি তাদের দাস। ।দাসরা কখনও নবাবের কক্ষে ঢুকতে পারেনা। কিন্ত আমি তা মানিনা বাংলার একজন ভিক্ষুকও তার সাথে দেখা করার অনুমতি পাবে যদি সে উপযুক্ত হয়। যার নাম গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। যার বড় সাক্ষী আজ আমাদের খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার জমসেদ আহমেদ তার আগের পরের পিএস ছিলেন।
আমি যেতেই ব্যক্তিগত কর্মকর্তার সেই একই বুলি।এখানে আমাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাগণও ঠিক তাদের এই রুলসের ফলোয়ার তাদের দ্বারা নি:পেষিত হয় তাদের অধীনস্ত কর্মচারীরা। তারা ইচ্ছা করলেও উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব এমননি মন্ত্রীর সাথে কথা বলতে পারেনা।অথচ আমার দৃষ্টিতে বাংলাদশ সচিবালয় হল আমাদের একটি বড় পরিবার। এখানে কর্মকর্তারা বদলীযোগ্য হলেও ২য়-৪র্থ শ্রেণীরা অবদলিযোগ্য। তারপরও আমরা এখানে একটি বড় পরিবার, একটি আবেষ্টনির ভিতর বাস করছি। সেই হিসেবে কৃষি মন্তনালয় হল একটি পরিবার আর আমরা হলাম সেই পরিবারের সদস্য। আমি আমার দীর্ঘ কর্ম জীবনেই তাদের ভিতর এই আগ্রাসী রুলস ফলো করেছি যা আমাকে কাদিঁয়েছিল, ক্ষত বিক্ষত করেছিল কিন্ত করার মত অবস্থা আমার ছিলনা। আমি দেখেছি আমাদের চারিপাশের পরিবেশ। সরকারের পরিবর্তন ও আসা যাওয়ার খেলা যা আমাকে বেশি মাত্রায় কষ্ট দিয়েছে কারন আমি দেখেছি -আমরা তাদের কাছে কুকুর আর বিড়াল সমতুল্য, অথচ বাহিরের লোকেরা তাদের কাছে কতই না মুল্যবা্ন। সেদিন কেবলই ভেবেছি-কেন আমি চাকুরীজীবী হলাম ? কেন রাজনীতিবিদ হতে পারিনি ? কেন আজ আমাদের এভাবে অবহেলা , হেয় চোখে দেখা হয় ? আর এই দেশের জন্য আমাদের বাবা মায়েরা একদিন স্বাধীনতার সপ্ন দেখেছিলেন,তাদের সন্তানদের জজ, ম্যাজিস্ট্রেড বানাবারা সপ্ন দেখতেন। অথচ সেই কৃষক সমাজ, বিপুল দরিদ্র জনগোষ্টি আজ অবহেলিত। যারা রাজনীতিবিদদের কাছে, আমলাদের কাছে মাথা নত করতে পারছে, স্যার , স্যার করতে পারছে তারাই কেবল লাভবান হচ্ছে অন্য দিকে সৎ মানুষগুলি কষ্ট পাচ্ছে, তারা ওএসডি হয়ে যায় অনেক সময় তারপরও বলার মত কিছুই থাকে না।
আরও বুঝলাম-আমরা হলাম সেই ছা পোষা কেরানী যাদের পাখির খাচাঁর মত গাড়ীতে ভরে অফিসে আনা হয় জেলখানায় ধরে কাজ করানো হয়, আর কাজ শেষে আবার বাসায় ফেরত পাঠানো হয়। কিন্ত তারা বোবা, তাদের কথা বলার শক্তি কেড়ে নিয়েই চাকুরীতে নিয়োগ করা হয়। তারা কথা বলতে পারেনা , কথা বললেই অথবা সেই আগ্রাসী রুলস ভঙ্গ করলেই তাদের সেই খাচাঁ থেকে বের হয়ে যেতে হবে। এটাই নিয়ম।কিন্ত আমার কাছে সেই নিয়মটিকে অতি নিষ্ঠুরতম মনে হয়েছে। মনে হয়েছে এটা নিয়ম বর্হিভূত কোন ভুলের শৃঙ্খলে আবদ্ধ যা মানুষের জন্য নয়, প্রানীর। যেখানে মানবজাতির কোন কল্যান আসতে পারেনা। এটা সেই আমেরিকান সাদা আর কালোর দাস প্রথা। যেখানে বিরাট বৈষ্যম্য রয়ে গেছে মানুষের মাঝে। এই দাস প্রথা কিভাবে ভাঙ্গা যাবে কেবল এটাই ভেবেছি। আমার কাছে মন্ত্রী-সচিব-পিয়ন সকলকেই মানুষ বলে মনে হয়েছে, কেহ দেবতা নয়। তাইত একসময় আমি ভাবতে শুরু করলাম-এই বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রী-সচিব-পিযনের কোন ভেদাভেদ থাকবে না সকলেই আমরা মানুষ।আর মৃতুর পর একই কবরে শায়িত হব। আর যখনই আমি ইন্টারনেটের পর প্রকাশ্যে চিৎকার শুরু করলাম আর তখনই আমাকে বেশিমাত্রায় তাদের তাগুদের ক্ষমতা আমার উপর প্রয়োগ করেছিল আর অবশেষে তার মাত্রা এত বেশি ছিল যে আমি সেখানে আর অবস্থান করতে পারিনি। যা ছিল আমার নিয়তী !
আর আজ যখন আমি ইতিহাস পর্যালোচনা করছি তখন দেখতে পাচ্ছি সত্যিকার শিক্ষিত, চেতনাবোধ, দেশপ্রেমিক, মানবতাবাদী মানুষই এই আগ্রাসী রুলসকে মেনে নিবে না। তারা চাইবে না এই শৃঙ্খলে বন্ধী হতে। তাইত সেই ১৯৭২ সনেই তারা সোচ্চার হয়ে উঠেছিল এই আগ্রাসী রুলসের বিরুদ্ধে। কারন এ দেশটি চারটি মুল নীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তা ও ধর্মনিরপেক্ষতা্ । কিন্ত স্বাধীনতার পর নতুন সরকার গঠনের পরই শুরু হয়েছিল সেই দমন পিড়ীন নীতি যা সেদিন তারা মেনে নিতে পারেনি। তাইত সেদিন জাসদ, বাকশাল, রক্ষী বাহিনী সৃষ্টি হয়েছিল । আর অবশেষে সেই আগ্রাসী রুলস ভেঙ্গে বাংলায় সেনাবাহিনী রাস্তায় নেমে এসেছিল জনগনের কাছে কিন্ত সে কথাত ছিলনা। তারপরও আমাদের নিয়তী !
ঠিক আজও আমি সেই আগ্রাসী রুলস আমি বাংলায় দেখতে পাচ্ছি যার জন্য নেতারা বলতে পারছেন-তত্বাবধায়ক পদ্ধতি নিয়ে আর কোন আলোচনার সুযোগ নেই।নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করাসহ অনেক বিষয় আলোচনা হতে পারে আর তা কেবল জাতীয় সংসদ। কিন্ত কেন সুযোগ নেই ? আর কেন হবে জাতীয় সংসদে ?
আর এটাও তাদের সেই আগ্রাসী রুলস যা প্রয়োগ করা হয়েছে বাংলার জনগনের উপর। আমি দেখেছি সংবিধান কেমন করে পরিবর্তন হয়। মানুষের এই লোভী মন মানসিকতার জন্য জনগনের টাকার কত অপচয় হয়। জিদের বশবতী হয়ে নোংরা খেলায় অবর্তীণ হয়ে বিপুল অর্থ ব্যয় করে নির্বাচন করা হয় আবার তা ভেঙ্গে দেয়া হয়। কিন্ত কেন ? কেন জনগনের টাকার অপচয় ? কেন পরিবর্তন হবেনা ? একি আল্লাহর সংবিধান ? এটা মানুষের হাতে গড়া , প্রকৃতির নয়। আর মানুষের কল্যানেই তার পরিবর্তন আসবে।
অন্যদিকে পবিত্র জাতীয় সংসদের ভিতর সারাজীবন ফাইল ছোড়াছুড়ি, সংসদ বয়কট, হিংস্বাত্বর কথা ছুড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে কেটেছে আর অবশেষে এসে স্থায়ীভাবে সংসদ বয়কট। যার চিত্র আজ বাংলার অসহায় জনগন চেয়ে চেয়ে দেখছে কিন্ত বলার শক্তি নেই কারন তারা আজ রাজনীতিবিদদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আর এটাই হল দাস প্রসা। আমরা এই দাস প্রথাকে ভাঙ্গতে পারছিনা কেবল তাদের খেলা দেখছি।
বাংলাদেশ জাতিয় সংসদ হল ১৬ কোটি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিমির্ত কক্ষ। ওটা কেবল সুরম্ম অট্টালিকা নয়। যেখানে বসে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এহ নোংরা রাজনীতি খেলা হবে। আর কত আলোচনা, সমালোচনা বাংলার জনগণ দেখবে ? আমরা একদিন এই আগ্রাসী রুলসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হযেছিলাম তারপর আমাদের মুক্তি এসেছিল অনেক রক্তের বিনিময়ে আর এই জাতীয় সংসদ হল সেই পবিত্র আমানত অথচ আজ সেই আমানতকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি। কিছু মানুষের লোভ-লালসা, অস্তিত্বের লড়াই আজ বাংলাকে ধ্বংষ করে দিচ্ছে। যা জাতির কাম্য নয়।
আর এই আগ্রাসী রুলসের জন্য আজ নির্বাচন কমিশন বীর দর্পে বলতে পারছেন-আ[sb]মরা ইভোটিং সিস্টেম বাংলার সকল স্তরে চালু করব, নির্বাচনকে শক্তিশালী করব, সুন্দর নির্বাচন করব। কিন্ত তা সম্ভব নয় কারন প্রশাসন সব সময়ই সরকারের পক্ষপাতিক্ষ করে যা বাস্তব। আর তার প্রমান নারায়নগঞ্জের নির্বাচনে সংবিধান লঙ্ঘন করা। তারা কেবল সরকারের খেলার পুতল।'' সেমন নাচাই তেমন নাচে পুতুলের কি দোষ ''।আমরা এই আগ্রাসী বাংলাদেশ সচিবালয়ের রুলস দ্বারা বন্দী। কথা বলার ক্ষমতা নেই। সরকার যেমন চালায় তেমন চলি। তাইত আজ আমি সেই আগ্রাসী রুলসকে ভেঙ্গেছি।
''আমি দুর্বার, ভেঙ্গে করি সব চুরমার।
আমি অনিয়ম উচছৃঙ্খল,
আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল।
আমি মানি নাকো কোন আইন,
আমি ভরা-তরি করি ভরা-ডুবি,আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন।''
আমি কোন দলের নই, জাতির নই, আমি মানুষের, আমি বাংলার কথা কই। আমি রাজনীতিবিদ হবার জন্য, অথবা আওযামীলীগ সরকারকে শায়েস্তা করার জন্য , অথবা কোন দলে যোগ দেবার জন্য, অথবা আত্মহত্যা করার জন্য বাংলাদেশ সচিবালয় ত্যাগ করিনি। আমি সেদিন কেবল আমার অসহায় সন্তানদের কথা ভেবে , দরিদ্র, ভাল মানুষগুলির অসহায়ত্বের কথা ভেবেই আমি বাংলাদেশ সচিবালয় হতে বের হয়ে এসেছিলাম যেখানে ভাল মানুষ, দরিদ্র কৃষক, শ্রমিক, মজুদুর, গরীব, দু:খ, প্রতিবন্ধেদের কেবল দাস হিসেবে দেখা হয়। কিন্ত মানুষ আল্লাহর সৃষ্টির সেরা জীব। তারা কারো দাস নয় তারা কেবল আল্লাহর প্রতি অনুগতশীল আর নতজানু। (সমাপ্ত)
কৃষান কন্যা রাহিলা, ১৭ নভেম্বর,২০১১ খ্রি:, বিকাল ৪-৪৬ মি:
ঠিক আজও আমি সেই আগ্রাসী রুলস আমি বাংলায় দেখতে পাচ্ছি যার জন্য নেতারা বলতে পারছেন-তত্বাবধায়ক পদ্ধতি নিয়ে আর কোন আলোচনার সুযোগ নেই।নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করাসহ অনেক বিষয় আলোচনা হতে পারে আর তা কেবল জাতীয় সংসদ। কিন্ত কেন সুযোগ নেই ? আর কেন হবে জাতীয় সংসদে ?
ReplyDelete