কৃষান কন্যা রাহিলা |
গতকাল আমি ভিষণভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলাম৷ যখনই আমি অসুস্থ হয়েছি ঠিক তখনই বড় সত্য আমার সামনে এসে দাড়িয়ে যায়৷ কয়েকদিন শরীরটা ভাল ছিলনা তাই আমার সপ্নের মিশনটির কাজও করতে মন চাইছিল না৷ তারপরও ছিল পারিবারিক সমস্যা৷ সবকিছু ভাবতে গিয়ে আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলাম৷ তারপর আমার ফেসবুকে হাজার বন্ধু থাকলেও বাস্তবে একজনও নেই৷ আমি বড়ই একা৷
তারপর আমি নড়াইলের গরীব, দু:খীদের সাথে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস-২০০৯ পালনের মাধ্যমে একদিন কৃষান কন্যা হিউমানিটি মিশনের সপ্ন দেখলাম৷ কিন্ত আমাদের বাস্তবতা বড়ই কঠিন ৷ তাইত বার বার আমি ব্যর্থ হয়েছি৷ আজ সবশেষে তাকে কোন রকমের দাড় করাতে চেষ্টা করছি তার বড় কারন আমি এই সরকারী বাসা কিছুতেই সহ্য করতে পারছিনা আর আমার যাবারও কোন জায়গা নেই একমাত্র আমার বাবার গ্রামের বাড়ী ছাড়া৷ কিন্ত সেই পরিবেশে আমার এই অবস্থায় বেচেঁ থাকা সম্ভব নয়৷ তাই ভাবছি আমার শেষ দৃশ্য কি হতে পারে৷ হয়ত হঠাত্ একদিন মারা যাব আর আমার সন্তানরা অসহায় হয়ে রাস্তয় নেমে পড়বে৷
আজ মনে পড়ছে- HEROES NEVER DIE গ্রুপ আমাকে হিরো হিসেবে চিহ্নিত করেছিল৷ যা ছিল আমার পুরস্কার৷ কিন্ত তারাত আমার জন্য দায়বদ্ধ নয়৷ বরং আমি তাদের কাছে দায়বদ্ধ আজ৷ কারন এই গ্রুপটি উত্সর্গ করা হয়েছে সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের৷ আর আমি সেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পুত্রবধু৷ তাই আমার দায়িত্ব অনেক বলে আজ মনে হয়৷ আর একটি কথা তা হল আমি নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেছি যা ছিল বড়ই সত্য৷ তবে [sb]আমি আজ প্রমান করেছি-এই বাংলায় তৃতীয় শক্তির কোন প্রয়োজন নেই৷ কারন সব শক্তিই আমাদের ১৬ কোটি মানুষের ভিতর৷ আমাদের ভিতর দুটি মানুষ বাস করে৷ কিন্ত আমরা ভাল মানুষটিকে আজ আপগ্রেড করিনা৷ এই একটিমাত্র কারনে আজ আমাদের এই বোবা কান্না৷[/sb] তাইত আমি সপ্নে দেখেছিলাম-বাংলার নতুন প্রজন্মদের মানবতাবাদী ও সদেশপ্রেমে উদ্বৃদ্ধ করে একটি ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত, সন্ত্রাসমু্ক্ত সম্মৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব৷ অবশেষে আমি দেখতে পেলাম আমার থেকে তারাইত মানুষকে বেশিমাত্রায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তবে কেন আবার ? কেন আজ আমরা আমাদের নেতাদের আর্দশকে ভুলে গেছি ? ভুলে যাবারত কথা ছিলনা৷ কিন্ত আমাদের বাস্তবতা এতই কঠিন যেখানে আজ আমাদের কারো বোবা কান্নার কথা শোনার মত সময় হয়না৷ ''একজন সকলের মন রক্ষা করতে পারেনা৷'' প্রতিনিয়ত কঠিন প্রতিকুলতার ভিতর দিয়ে চলতে গিয়ে আজ আমাদের মানুষের সাথে অভিনয় করতে হচ্ছে৷ এটাই বাস্তব৷ আর এই কঠিন বাস্তবতার কিছুটা পরিবর্তন আনার জন্যই আজ আমাদের এই সংগ্রাম৷
আমি তিন বছর ধরে এখানে কাজ করে আজ বড় সত্যে উপনিত হয়েছি-আজ আমাকে বেচেঁ থাকতে হলে অবস্যই কাউকে অবলম্বন করতে হবে৷ আর এটাই আমার শেষ সিদ্ধান্ত যা আমি আজ ভাবছি৷ আর প্রতিটি মানুষের নিজস্ব একটি নীতি আদর্শ থাকে৷ যা আমারও আছে আর তা কেবল জীবন থেকে সৃষ্টি হয়৷ আজ আমি মনে মনে একজনকে ভেবেছি আর তিনি ছাড়া এই মুহুর্তে আমাকে উদ্ধার করা বা আমার সারাজীবনের লালিত সপ্নকে বাস্তবে রুপ দেওয়া সম্ভব হবে না৷ কারন-
১. মনে পড়ছে-১৯৮২-৮৩ সন৷ নড়াইলের স্টেডিয়ামের মাঠ৷ ছাত্রলীগ নেতা কবির জাহাংগীর শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছিল একটি কাচেঁ বাধানো ছবির ফ্রেম৷ আর রাহিলাকে কৃষকের মেয়ে বলে নড়াইলে আমার সকল বড় ভাইদের সামনে অপমানিত করে চলে গেল ইউরোপে৷ অথচ তাকে আমি জীবনে কাছ থেকে দেখিনি৷ কি অদ্ভুদ নিয়তী আমার ! ৩৪ বছর পরে নড়াইলের গরীব, দু:খীর মাঝে আবার দাড়িয়ে কৃষান কন্যা৷
২. আমার বাবা বড় ভাইকে তিনজন মাস্টার দিয়ে মানুষ করে ম্যাজিষ্ট্রেড বানাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্ত ১৯৭১-১৯৭৫ কেবলমাত্র আওয়ামীলীগের কারনে তারঁ সব সপ্ন ভেঙ্গে গেল আর আমরা হয়ে গেলাম ছিন্নভিন্ন৷ আর ১৯৯১ সনে সেই আমাকে ঢাকায় এসে হতে হল খামারবাড়ীর শিক্ষিত খামার শ্রমিক আর ভাইদের হতে হল সেই আওয়ামীলীগের দাস৷ যা ছিল আমাদের নিয়তী৷
৩. দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে নড়াইলের আওয়ামীলীগ আমাদের উপর ভর করে দাড়িয়ে আছে আর আমি হলাম গোপালগঞ্জের শহীদ পরিবারের একজন পুত্রবধু যাকে তারা তাদের সন্তান মানুষ করার জন্য নড়াইল হতে নিয়ে গিয়েছিলেন কিন্ত বাস্তব জীবনে আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারিনি৷ অথচ সেই আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে আমাকে প্রতিবন্ধীর সার্টিফিকেট আনতে ফিরে যেতে হল নড়াইলে যেখান থেকে ৩৪ বছর আগে আমি চলে এসেছিলাম, আবার অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আমাকে দাড়াতে হল সেই নড়াইলের দু:খী, দরিদ্র মানুষের মাঝে যা ছিল আমার কাছে ভিষণ বেদনাদায়ক !!
৪. তারপর দুইবার অপারেশন টেবিল হতে ফিরে আসা একজন অসুস্থ্য মানুষকে সেই আওয়ামীলীগ সরকার সাময়িক বরখাস্ত করে বুঝিয়ে দিল তারা কত নিষ্ঠুর ! এমনকি বলা হল-কেবল অসুস্থ আর সন্তানদের দিকে চেয়ে কেবল সাময়িক বরখাস্ত নইলে বিনা কৈফিয়তে, বিনা অর্থে বরখাসত্ম করা হত, এমনকি বলা হল ডিজিএফ,এনএসআই আমাকে প্রতিনিয়ত সার্চ করছে৷ যা ছিল বড়ই লজ্জাজনক আমার কাছে কারন আমি গোপালগঞ্জের তত্কালীন বিখ্যাত সফিউদ্দিন মিনার পোতা বউ আর মেজর জেনারেল মোজাহেদ উদ্দিন মিলনের সম্পর্কীয় বড় ভাবী৷ পিতার সম্পদে অধিকার থাকা সত্বেও গ্রহন করিনি নিজে চাকুরী করে ভাত খেয়েছি, আমার সনত্মানদের মানুষ করেছি৷ যা ছিল আমার গর্ব৷ অথচ আজ গোপালগঞ্জের সরকার আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বহিস্কার করেছে যা আমি মেনে নিতে পারিনি৷ তাইত আমি আজ নিজের জমি বিক্রি করে চলছি, তারপরও তাদের কোন অর্থই আমি গ্রহন করিনি, যা আমার ব্যক্তিসত্বায় আঘাত হেনেছিল৷ তাইত আমি লজ্জায, ঘৃনায় অফিস ত্যাগ করেছিলাম সেদিন৷
৫. আরও মনে পড়ছে-আমাদের অনেক কাছের সাবেক সংসদ সদস্য খসরুজ্জামান ভাই ও দাদা ধীরেন্দ্রনাথ সাহা দুজনই তাদের দীর্ঘদিনের আওয়ামীলীগের নীতি আদর্শ ত্যাগ করে জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান করেছিলেন৷ ঠিক তেমনি আজ আমিও ভাবছি-নড়াইলের জনগনের জন্য কাজ করতে হলে আমাকে আজ কোন একটি দলে যোগ দিতে হবে তবে সেটি কোন দল হতে পারে ?
যেহেতু আজ আওয়ামীলীগ পরিবারে জন্মগ্রহন করে আর গোপালগঞ্জের পুত্রবধু হয়ে শেখ মুজিবকে মাথার উপর থেকে কেটে ফেলেছি কারন এই ছবিটি অদৃশ্য অশুভশক্তি বলে মনে হয়েছে আমার কাছে৷ যা মাথার উপর থাকলে আমলা ও নুতন প্রজন্মরা সব গড হয়ে যাবে, তারা কখনও মানবতাবাদী বা সদেশপ্রেমিক হবে না৷ যা আমার বিশ্বাস ও উপলব্দি৷ তাইত তার আদর্শ ফলো করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়্৷
মনে পড়ছে-উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী আমাকে সব সময়ই বাঙ্গালী বলে ডাকতেন৷ এমনকি শেষ দিনও তিনি বলেছিলেন-'তুমি যে পথে যাচ্ছ সে পথে যাও৷ বাঙ্গালীর জয় হোক৷ '' তবে বাঙ্গালীর অর্থ আমার জানা ছিলনা তবে এখন বুঝতে পারছি৷ বাঙ্গাল থেকে সম্ভবত: বাঙ্গালী নামের উত্পত্তি৷ বাঙ্গাল অর্থ অশি্ক্ষিত, অসহায় পুর্ব বাংলার জনগন৷ বিশেষ করে ফরিদপুর এলাকার মানুষদের বলা হত৷ আর আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন-বাঙ্গালীরা হল আদিবাসী৷ তাইত আজ আমি গোপালগঞ্জের বাঙ্গালী বাংলাদেশী হয়ে গেছি৷ আর আমাদের সকল বাঙ্গালীদের বাংলাদেশী করে গড়ে তুলতে চাই৷ আমরা বাঙ্গালী থাকতে চাইনা৷
তাইত আজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার আদর্শ হতে পারে কারন তিনিও শৃঙ্খলা বন্দী জীবনের জিজ্ঞির ভেঙ্গে এক সময় বাংলার কাদাঁমাটিতে নেমে এসেছিলেন মানুষকে ভালবেসে৷ তারঁ নীতি, আদর্শ গণতান্ত্রিক ধারায় নিবেদিত কিন্ত বিবতর্নের ধারায় হয়ত ম্লান হয়ে গেছে৷ তাইত আবার বাংলায় নতুন প্রজন্মদের সত্যিকার অর্থে তারঁ আদর্শকে বাংলায় প্রতিষ্টিত করার জন্য উজ্জিবিত করতে হবে৷ আর তখনই হয়ত সেই শহীদ বীর সেনাদের সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জনগনের মাঝে ফিরে আসবে৷ আর সেদিনই হয়ত সোনার বাংলাদেশ সত্যিকারে সোনার বাংলায় পরিনত হবে।
পরিশেষে একটি কথা-১৯৯৩ সনে সাখাওয়াত আমার ব্যক্তিসত্বায় আঘাত দিয়ে কথা বলেছিল৷ তাই আমি সেদিন ঢাকা ছেড়ে নড়াইলে ফিরে গিয়েছিলাম চিরদিনের জন্য৷ সাখাওয়াত সেদিন নিজ হাত বেস্নড দিয়ে কেটেছিল আর কেদেঁছিল আমাকে ফিরিয়ে আনার জন্য৷ তখন মেজে ভাই বলেছিল ছোট্ ভাইকে-''রাহিলা ঢাকায় চলে যাক ওর সাথে কারন আমাদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের দ্বিতীয়বার বিয়ে হয়না আর আমাদের পরিবারের মেয়েরা কখনও কোটে উঠেনা৷'' তাইত এই পথেই আজ আমি আবার নড়াইলে ফিরে যেতে চাই৷ এ ছাড়া যে আমার আর কোন পথ নেই৷ (অব্যাহত)৷
No comments:
Post a Comment